ইতালি ভিসা খরচ জানার আগে কিছু বিষয় জেনে নেওয়া যাক। ইতালির বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি সিজনাল ভিসা আর অন্যটি নন সিজনাল ভিসা। সিজনাল ভিসা হলো এমন ভিসা যে ভিসা দিয়ে আপনি ৬ থেকে ৯ মাস সেখানে গিয়ে থাকতে পারবেন। এর বেশি সময় থাকার জন্য আপনাকে পারমিশন দেয়া হবে না।
আর নন সিজনাল ভিসাতে আপনি যত দিন খুশি থাকতে পারবেন। এখানে আপনার কোন সময় নির্ধারণ থাকবে না। তবে এ ধরনের ভিসা পাওয়া কঠিন। কেন কঠিন তা আমরা আপনাকে এই আর্টিকেলেই জানিয়ে দিব।
সিজনাল ভিসার মধ্যে পড়ে পড়াশোনা, চিকিৎসা ও ভ্রমণ ভিসা। আর নন সিজনাল ভিসা হলো কাজের ভিসা।
ইতালি ভিসা খরচ 2024
সিজনাল ভিসার জন্য খরচ পরে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। আর নন সিজনাল ভিসার জন্য খরচ পরে ১০ থেকে ১১ লক্ষ টাকা। তবে ইতালি নন সিজনাল ভিসা খুব কম পাওয়া যায়। যদি আপনার কোন নিকট আত্মীয় ইতালি থেকে থাকে তবে সেক্ষেত্রে আপনি নন সিজনাল ভিসায় যেতে পারবেন খুব সহজে।
ইতালি যেতে কত টাকা লাগে
এটা নির্ভর করে আপনি কোন ভিসায় যাচ্ছেন এবং কিভাবে যাচ্ছেন। এই প্রশ্নের উত্তরটা সাধারণত একেক জনের জন্য একেক রকম হবে। তবুও সবার জন্য আনুমানিক ধারণা করে বলে যায় যে, ইতালি যেতে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা লাগে। এর থেকে একটু কম অথবা বেশি লাগতে পারে। তবে আপনাকে এটা মাথায় আনুমানিক ধরে নিয়েই আগাতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়
কোন রকমের ঝুঁকি ছাড়া সরাসরি ইতালিতে বৈধভাবে যাওয়ার উপায় হল স্পন্সর ভিসা। প্রত্যেক বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত স্পন্সর ভিসার মাধ্যমে ইতালিতে কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে ইতালি সরকার। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে উক্ত বিজ্ঞপ্তি গুলো প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
তাই বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যাওয়ার সহজ উপায় হল স্পন্সর ভিসা। বৈধ ভাবে এবং সঠিক নিয়মে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আপনারা ইতালিতে কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া ইতালিতে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই স্পন্সর ভিসা এবং সিজনাল বা নন সিজনাল নিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করতে হবে। তাছাড়া অবৈধভাবে ইতালিতে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে।
স্পন্সর ভিসা পাওয়ার উপায়
নতুন কর্মী নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ইতালি স্পন্সর ভিসার মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বছরের শুরুতে বিভিন্ন পত্র পত্রিকার মাধ্যমে আপনারা স্পন্সর ভিসার আবেদন দেখতে পাবেন।
এক্ষেত্রে সরাসরি আপনারা সরকারি এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করবেন। তাহলে আপনারা সুযোগ সুবিধা বেশি পাবেন এবং কম খরচের মধ্যে ইতালিতে স্পন্সর ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন।
বৈধভাবে যেসব ভিসায় ইতালি যেতে পারবেন
- ইতালি স্পন্সর ভিসা
- ইতালি Student ভিসা
- ইতালি কৃষি ভিসা
- ইতালি মেডিকেল ভিসা
- ইতালি টুরিস্ট ভিসা
সাধারণত মানুষ ইতালি গিয়ে কি ধরনের কাজ করেন?
এটা মূলত নির্ভর করে সে কি ভিসা নিয়ে ঐ দেশে ভ্রমণ করেছেন। যেমনঃ যে Student ভিসা নিয়ে গিয়েছে সে সাধারণত শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত কাজগুলো করবেন পড়ালেখার পাশাপাশি। তা হতে পারে রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ অথবা উবার চালানো অথবা নিজের ক্যাম্পাসে কোন কাজ করা।
কিন্তু যারা স্পন্সর ভিসা অথবা কৃষি ভিসা নিয়ে যাবেন, তাদেরকে ঐ কাজই করতে হবে যা তারা তাদের ভিসাতে চুক্তিবদ্ধ করে এসেছেন। সে ক্ষেত্রে অন্য কোন কাজ করার সুযোগ নেই। তবে একটি নির্দিষ্ট সময় পর সে অন্য কাজ করতে পারবে যদি ইতালিতে বৈধভাবে থাকার কোন ব্যবস্থা হয়।
ইতালির ভিসার জন্য আবেদন ২০২৪
ইতালি ভিসা পাওয়ার জন্য অনেকগুলো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। অর্থাৎ আবেদন করার জন্য অনেকগুলো প্রক্রিয়া আপনাকে সম্পন্ন করতে হবে। যেমনঃ আপনার পাসপোর্ট থাকতে হবে। যে ভিসায় যাচ্ছেন সেটি নির্ধারণ করতে হবে। অর্থাৎ, আপনি সিজনাল ভিসায় যাবেন নাকি নন সিজনাল ভিসায় যাবেন সেটি আগে নির্বাচন করতে হবে।
এরপর আপনার প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ এর অধীনে জমা দিতে হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ ছাড়া আপনি কখনোই বৈধভাবে ইতালি যেতে পারবেন না। তাই আপনার প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্যাদি এই অফিসে জমা দিতে হবে।
অতঃপর আপনি ইতালিতে কি কাজে যাচ্ছেন, কোথায় থাকবেন, কাজের চুক্তির মেয়াদ ইত্যাদি আপনার ইতালি আবেদনপত্রে থাকতে হবে। আবেদন পত্র গ্রহণ করা হলে তা ভালোভাবে বিবেচনা করা হবে এবং যদি বিবেচনা করে তারা আপনাকে ভিসার জন্য যোগ্য প্রার্থি মনে করে তাহলেই কেবল আপনি ভিসা পাবেন। আর ভিসা পাওয়ার পর তবেই আপনি ইতালি প্রবেশ করতে পারবেন।
নন সিজনাল ভিসার ক্ষেত্রে আপনি কত বছর ইতালিতে থাকতে পারবেন?
আপনি নন সিজনাল ভিসা তখনই পাবেন যখন আপনাকে কাজের জন্য ভিসা দেওয়া হবে। এবং এ ভিসায় আপনি সর্বনিম্ন ২ বছর থেকে ৩ বছর ইতালি থাকতে পারবেন।
সিজনাল ভিসা নিয়ে ইতালি গেলে কত দিন আপনি ইতালিতে থাকতে পারবেন?
সিজনাল ভিসার ক্ষেত্রে আপনি সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৯ মাস ইতালি থাকতে পারবেন।
ইতালি টুরিস্ট ভিসা খরচ কত ২০২৪?
ইতালি টুরিস্ট ভিসার খরচ ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা।
মানুষ কেন অবৈধ পথে ইতালি যায়?
কারণ তারা সম্ভবত বৈধ কাজের ভিসা পায়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটাই মূল কারণ। তবে অবৈধ পথে দালাল ধরে ইতালি যাওয়া মোটেই উচিত নয়। কারণ ধরা পরলে এক টাকার জায়গায় তিন টাকা দিতে হবে এবং অনেক কষ্ট হবে। এমন খবর হরহামেশাই শোনা যায় যে অবৈধ পথে ইতালি যেতে নিয়ে মারা গেছে। এতে টাকাও যায় সাথে জীবনটাও যায়, উপরন্তু পরিবারের উপরও কষ্ট নেমে আসে। তাই অবৈধ পথে দালাল ধরে ইতালি না যেয়ে বৈধ পথে যাওরার চেষ্টা করুন যত টাকারই প্রয়োজন হোক না কেন এবং যত দিনই অপেক্ষা করতে হয় না কেন।
শেষ কথা
আশা করি ইতালি ভিসা খরচ সহ আরও অনেক বিষয় সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। যদি তাই হয় তাহলে আপনার বন্ধু বান্ধবী এবং পরিবার পরিজনদের সাথে শেয়ার করুন। চাইলে আমাদেরকে নিচে ফেসবুকে ফলো করতে পারেন। ধন্যবাদ।