ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নতুন নিয়ম

বর্তমানে এন আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করা থেকে এন আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন এবং ডাউনলোড সব কিছুই অনলাইনে করতে হয়। আপনি যদি নতুন ভোটার নিবন্ধন করে থাকেন তাহলে আপনি সেটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন। 

অনলাইনে কীভাবে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হয় আপনি যদি তা না জেনে থাকেন তাহলে আজকের পোস্টটি আপনারই জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে কিভাবে অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে হবে সেই সম্পর্কে আলোচনা করব।

তাই ভোটার আইডি ডাউনলোড করার পুরো প্রক্রিয়াটি জানার জন্য আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত ভালোমত পড়ুন।

ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য কি কি প্রয়োজন?

অনলাইনে আপনি খুব সহজেই আপনার এন আইডি নাম্বার অথবা নিবন্ধন ফর্মের স্লিপ নাম্বার দিয়ে আপনার এন আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। এখন জেনে নেয়া যাক,

 ভোটার আইডি ডাউনলোড করতে যা যা প্রয়োজন তা হলোঃ

  • একটি কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ এবং ফেইস ভেরিফাই করার জন্য একটি স্মার্ট ফোন
  • নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টেরনেট সংযোগ
  • ভোটার নিবন্ধন ফর্মের স্লিপ নাম্বার বা এন আইডি নাম্বার 
  • আপনার জন্ম তারিখ 
  • বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা

ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার প্রক্রিয়া

আপনার ভোটার আইডি ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে বাংলাদেশ এর ভোটার নিবন্ধনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। তারপর আপনার ফর্ম নাম্বার অথবা এন আইডি নাম্বার, জন্ম তারিখ দিতে হবে। এরপর বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করতে হবে। সবশেষে আপনার ফোনে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে তখন ফোনে NID Wallet app এর মাধ্যমে ফেস ভেরিফিকেশন করে পুরো প্রসেসটি কমপ্লিট করতে হবে।

প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হওয়ার পর আপনি আপনার এন আইডি এর সকল তথ্য দেখতে পাবেন এবং আইডি কার্ড ডাউনলোড করার একটি অপশন পাবেন। তারপর ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আপনি ভোটার আইডি ডাউনলোড করতে পারবেন। আপনি চাইলে হারানো আইডি কার্ডও এভাবে ডাউনলোড করতে পারেন।

ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম

বর্তমানে আপনি ঘরে বসে কয়েক মিনিটের মধ্যে মোবাইল, ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার থেকে আপনার এন আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন করে ডাউনলোড করতে পারবেন।

এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য নিচের সহজ ধাপগুলো অনুসরণ করলেই চলবে।

  • আপনার মোবাইল ফোনের গুগল প্লে স্টোর থেকে NID Wallet App টি ইন্সটল করুন।
  • ভোটার আইডি কার্ড নিবন্ধন করার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট- services.nidw.gov.bd এই লিংক এ যান।
  • স্লিপ নাম্বার দিয়ে রেজিস্টার করার জন্য স্লিপ নাম্বার এর প্রথমে NIDFN লিখতে হবে। যেমন স্লিপ নাম্বার 392875820 হলে টাইপ করবেন NIDFN392875820 অথবা এনআইডি নাম্বার থাকলে সেটি লিখুন।
  • আপনার জন্ম তারিখ দিতে হবে।
  • ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট অপশনে ক্লিক করুন।
  • বর্তমান ঠিকনা এবং স্থায়ী ঠিকানা সিলেক্ট করবেন।
  • এরপর মোবাইল নাম্বার টাইপ করে ‘বার্তা পাঠান’ অপশনে ক্লিক করলে আপনার ফোনে আসা কোডটি দিয়ে মোবাইল ভেরিফিকেশ করুন।
  • ফেইস ভেরফিকেশনের জন্য QR code scan করতে হবে।
  • তারপর আপনার একাউন্টের জন্য একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড সেট করুন।
  • লগইন করার পর ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে ভোটার আইডি ডাউনলোড করুন।

আপনাদের সুবিধার্থে নিচে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ছবিসহ ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হলোঃ

ধাপ-১ঃ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন

সর্বপ্রথম আপনাকে ভোটার নিবন্ধনের ওয়েবসাইট  https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/  এই লিংকে এ ঢুকতে হবে। তারপর নিচের ছবির মত একটি পেইজ দেখতে পাবেন। এরপর আপনাকে একাইউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। একাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য নিচের ধাপটি অনুসরণ করুন।

nid card download 1

ধাপ-২ঃ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন

একাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য নিচের ধাপগুলো পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে হবে।

  • একাউন্ট রেজিস্টার করার জন্য আপনাকে প্রথমে আপনার NID নাম্বার অথবা ফর্মে থাকা স্লিপ নাম্বার দিতে হবে।
  • তারপর জন্ম তারিখ দিয়ে ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট করতে হবে।
  • পরবর্তীতে আপনাকে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করতে হবে।
  • এরপর আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি ভেরফিকেশন কোড ( OTP code ) পাঠানো হবে। কোডটি দেখে ঠিকভাবে ইনপুট করুন।
nid card download 2
nid card download 3
nid card download 4

একাউন্ট রেজিস্টার করা কমপ্লিট হলে পরবর্তী স্টেপগুলো follow করুন।

ধাপ-৩ঃ NID Wallet App ডাউনলোড করে ফেইস ভেরিফিকেশন করুন

এখন আপনার প্রয়োজন হবে একটি স্মার্ট ফোনের। আপনার ফোনের গুগল প্লে স্টোর থেকে NID Wallet App টি ডাউনলোড করুন। তারপর একটি QR কোড দেখতে পাবেন । QR কোডটি স্ক্যান করে আপনার ফেইস ভেরিফাই করুন। 

nid card download 5

ফেইস ভেরফিকেশন এর জন্য start face scan বাটনে ক্লিক করুন. প্রথমে আপনার মুখমণ্ডল সোজা তারপর মাথা ডানে একবার এবং বামে একবার ঘুরাবেন। স্ক্যান করা ঠিকঠাক হলে ছবিতে ok বা টিক মার্ক চিহ্ন দেখতে পাবেন।

ধাপ-৪ঃ পাসওয়ার্ড সেট করুন

এবার একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করুন যাতে পরে আবার ফেইস ভেরিফিকেশনের ঝামেলায় না পরতে হয় এবং ফেইস ভেরিফিকেশন ছাড়া এনআইডি লগইন করতে পারেন ।

ধাপ-৫ঃ ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করুন

সবশেষে এবার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার পালা!! সবগুলো ধাপ সম্পন্ন করার পর NID ওয়েবসাইটে আপনি ভোটার আইডি ডাউনলোড করার অপশন দেখতে পাবেন। ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করার পর আপনি নিজের প্রোফাইলটি দেখতে পাবেন।

সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার উপায়

আপনি যদি ভোটার আইডি কার্ডের কোন তথ্য  সংশোধন করে থাকেন তাহলে আপনি ভোটার আইডি সংশোধন হবার পর সেটি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করতে  পারবেন। কিন্তু যারা ঠিকানা ( বর্তমান বা স্থায়ী ) পরিবর্তন করেছেন তাদের ক্ষেত্রে এনআইডি ডাউনলোড করা যাবে না। তাদেরকে ঠিকানা সংশোধিত হবার এনআইডি রিইস্যুর আবেদন করতে হবে।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন হওয়ার পর ‘আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদনটি সংশোধিত হয়েছে’ এরকম একটি মেসেজ পাবেন। এরপর উপরে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি আপনার ভোটার আইডি ডাউনলোড করতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর

 ১। আমি যথাযথ সময়ে ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারিনি। এখন করা যাবে কিনা?

উঃ হ্যাঁ, আপনি যদি আগে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করে না থাকেন তাহলে যেকোন সময়ে আপনি অনলাইনে ভোটার নিবন্ধনের ওয়েবসাইটে যেয়ে আবেদন করতে পারবেন।

২। নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কি কি কাজগপত্র লাগবে?

উঃ আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান তাহলে প্রথমে আপনাকে অনলাইনে ভোটার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে তারপর সেটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করবেন। এর সাথে আপনার জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি, ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ইউটিলি বিলের ফটোকপি, আপনার এসএসসি বা সমমানের সারটিফিকেট এর ফটোকপি।

৩। অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদন করতে কত টাকা লাগে?

উঃ অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন করার জন্য কোন টাকা পরিশোধ করতে হয় না।

৪। আমি ভুল করে NID এর জন্য ২ বার রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেছি এখন কি করবো?

উঃ যত দ্রুত পারেন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে আপনার ভুলত্রুটি উল্লেখপূর্বক লিখিতভাবে একটি আবেদন করুন।

আরও দেখুন

শেয়ার করুন

Leave a Comment