শেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে যাওয়া তুলনামূলক জটিল একটি প্রক্রিয়া। অনেকেরই ইচ্ছা থাকে বিদেশে যেয়ে অনেকে টাকা আয় করে একটি সুন্দর এবং স্বচ্ছল জীবনযাপন করার। সেই ইচ্ছা থেকেই প্রতিনিয়ত মানুষ বিদেশে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তাই প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ শেনজেন তালিকাভুক্ত দেশগুলোতে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কীভাবে শেনজেন ভিসা করতে হয় সেটি জানেন না।
তাই তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলে শেনজেন এ যাওয়ার উপায়, শেনজেন ভিসা খরচ, শেনজেন যেতে কি কি ডকুমেন্টস লাগবে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
শেনজেন ভিসা পাওয়ার পদ্ধতি
শেনজেন ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবেঃ
ধাপ-১ঃ ভিসা আবেদন করা
যেকোন দেশে যাওয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে ভিসা আবেদন করা। সর্বপ্রথম আপনি শেনজেন এর অন্তর্ভুক্ত যেই দেশে যেতে চাচ্ছেন সেখনকার ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। আপনি যেই উদ্দেশ্যে যাবেন যেমন- যদি ব্যাবসা বা কাজের জন্য যেতে যান তাহলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, ভ্রমনের উদ্দেশ্যে গেলে টুরিস্ট ভিসা, পড়াশোনার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা ইত্যাদি ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা আবেদন করতে হবে।
ধাপ-২ঃ নির্দেষ্ট ওয়েবসাইটে ভিসা ফর্ম পূরণ করা
শেনজেন এর তালিকাভুক্ত প্রতিটি দেশের নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে ভিসা আবেদন করার জন্য। যেমনঃ রোমানিয়া ভিসা আবেদন করার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট-https://mae.ro/en/node/2060, ইতালি ভিসা আবেদনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট- https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/ita/apply-visa
গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য হলো শেনজেন এর সব দেশের ভিসা আবেদন আপনি সরাসরি অনলাইনে করতে পারবেন না। সেজন্য আপনাকে প্রথমে উক্ত দেশের দূতাবাসে এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে যোগাযোগ করতে হবে এরপর ভিসা আবেদন করতে পারবেন।
ধাপ-৩ঃ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদান
ভিসা আবেদন করার পর আপনাকে প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে হবে। ভিসা ফর্ম জমা দেওয়ার সময় নিম্নোক্ত ডকুমেন্টস জমা দিতে হবেঃ
- একটি বৈধ পাসপোর্ট ( পাসপোর্টের মেয়াদ নূন্যতম ৬ মাস হতে হবে)।
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
- আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
- ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট।
- হেলথ সার্টিফিকেট ।
- এছাড়া অন্যান্য দরকারি সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
ধাপ-৪ঃ সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে যোগাযোগ করা
শেনজেন ভুক্ত সব দেশের ভিসা আবেদন অনলাইনে করা যায় না। সেজন্য আগে আপনাকে সংশ্লিষ্ট দেশের এমব্যাসি/ দূতাবাসে আপনাকে এপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। তারপর দূতাবাসের জেনারেল এম্ব্যাসাডর এর সাথে যোগাযোগ করে পরামর্শ নিয়ে ভিসা আবেদন করতে হবে।
শেনজেন ভিসার খরচ
ভিসা খরচ সাধারণত দেশ এবং ভিসা ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে। একেক দেশের ভিসা খরচ একেক রকম। আবার ভিসার ধরণ যেমনঃ ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা ইত্যাদি visa ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে ভিসার খরচ নির্ধারণ করা হয়।
তবে বর্তমানে ভিসার খরচ তুলনামূলক বেশি। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির শেনজেন ভিসা ফি ৮০ থেকে ৯০ ইউরো ( বাংলাদেশি টাকায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা )। আর ৬ থেকে ১২ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের জন্য ৪০ থেকে ৪৫ ইউরো ( বাংলাদেশি টাকায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা) ।
শেনজেন দেশের সুবিধা
শেনজেন তালিকাভুক্ত দেশগুলোতে নানা ধরণের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। শেনজেন এর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- ফ্রান্স, জার্মান, ইতালি, নরওয়ে, ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, স্পেন ইত্যাদি। নিম্নে শেনজেন দেশগুলোতে কি কি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা উল্লেখ করা হলোঃ
- শেনজেন ভিসার মেয়াদ সাধারণত ৯০ দিন থাকে। একটি ভিসা দিয়ে আপনি অনেকগুলো দেশ ভ্রমনের সুযোগ পাবেন।
- শেনজেনভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোতে সহজে যাতায়াত করা যায়।
- এই দেশগুলো অর্থনীতি, শিক্ষা, চিকিৎসা সবকিছুতেই অনেক উন্নত।
- দেশগুলো শিল্প-সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। রয়েছে নানা ধরণের পর্যটন কেন্দ্র।
- দেশের নাগরিকদের জন্য রয়েছে উন্নত জীবনযাপনের সু-ব্যবস্থা।।
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসবে। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে আপনি আপনার বন্ধু বা পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।