ভিসা কীভাবে করতে হয়? ভিসা করতে কি কি লাগে?

যেকোন দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা একটি অত্যাবশ্যকীয় ডকুমেন্টস। বিদেশে পড়াশোনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ভ্রমণ অথবা চিকিৎসা যে উদ্দ্যেশ্যের জন্যই যান আপনাকে ভিসা করতে হবে। ভিসা হচ্ছে একটি অনুমোদন পত্র। কোন দেশে প্রবেশের অনুমতি প্রদান ভিসার মাধ্যমে দেওয়া হয়।

বৈধভাবে যেকোন দেশে যেতে হলে আপনাকে ভিসা নিয়ে যেতে হবে। দেশে অবস্থিত অন্যান্য দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে আপনাকে ভিসা আবেদনের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। আর ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন দেশের ভিসা আবেদনের শর্তাবলী মেনে আবেদন করতে হবে।

তাই আজকের এই আর্টিকেলে ভিসা কীভাবে করতে হয়, ভিসা করার জন্য কি কি ডকুমেন্টস লাগে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। ভিসা করার পুরো প্রসেস জানতে হলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভিসা কিভাবে করতে হয়?

দেশভেদে ভিসা আবেদনের নিয়মে পার্থক্য থাকে। ভিসা আবেদনের জন্য একেক দেশের আলাদা আলাদা শর্ত থাকে সেগুলো পূরণ করতে হয়। তারপর আপনি কোন ভিসায় যাবেন ( ওয়ার্ক পারমিট, স্টুডেন্ট, চিকিৎসা, ভ্রমণ ভিসা) সেটার উপর ভিত্তি করে আপনাকে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। 

ভিসা আবেদনের জন্য প্রথমে আপনাকে অনলাইনে ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। প্রতিটি দেশের ভিসা ফর্মের জন্য আলাদা ওয়েবসাইট রয়েছে। ভিসা ফর্মে প্রদানকৃত তথ্যের সাথে পাসপোর্টের তথ্যের যেন মিল থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার ভিসা অনুমোদন হয়েছে কিনা সেটিও অনলাইন থেকে যাচাই করতে পারবেন। এরপর আপনার কাগজপত্র সব ঠিক থাকলে আপনাকে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য একদিন ভিসা সেন্টারে যেতে হবে। 

তারপর বিমানের টিকেট কেটে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনি আপনার গন্ত্যব্যের দেশে পৌঁছে যেতে পারবেন। 

ভিসা করতে যে যে ডকুমেন্টস লাগবে-

আপনি কোন ভিসায় যাবেন সেটার উপর নির্ভর করে আপনাকে ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতে হবে। নিম্নে যে সকল ডকুমেন্টস জমা দিতে হয় সেগুলো দেওয়া হলোঃ

  • আবেদনকারীর একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং পাসপোর্টের মেয়াদ নূনতম ৬ মাস হতে হবে।
  • পাসপোর্টে অন্তত ৩ টি পেইজ খালি থাকতে হবে।
  • আবেদনকারীর নাম, পাসপোর্ট নাম্বার যেন সঠিক থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
  • আবেদন ফর্মে স্ক্যান করা যথাযথ সাইজের ছবি আপলোড করতে হবে।
  • বর্তমান ঠিকনা, স্থায়ী ঠিকানা জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিল থাকতে হবে।
  • ইউটিলিটি বিলের ( পানি/গ্যাস/বিদ্যুৎ ) ফটোকপি।
  • ভিসা ফর্মে প্রদানকৃত জন্ম তারিখ এনআইডি কার্ডের সাথে এক হতে হবে।
  • ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সহ ভিসা সেন্টারে জমা দিতে হবে।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে কি কি লাগে?

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে যা যা ডকুমেন্টস লাগবে সেগুলো হলোঃ

  • একটি লিগেল পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং পাসপোর্টের মেয়াদ নূন্যতম ৬ মাস হতে হবে।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট ( IELTS, TOEFL )
  • বিএমইটি স্মার্ট কার্ড ( BMET clearance card) লাগবে।
  • ইনকাম ট্যাক্সের রিপোর্টের ফটোকপি লাগবে।
  • মেডিকেল হেলথ রিপোর্ট এর কপি
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
  • নিজের লেখা কভার লেটার দিতে হবে

স্টুডেন্ট ভিসা করতে কি কি লাগে?

স্টুডেন্ট ভিসা করতে যে সব ডকুমেন্টস লাগবে সেগুলো হলোঃ

  • একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে (পাসপোর্টের মেয়াদ নূন্যতম ৬ মাস হতে হবে)
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট। যেমনঃ এসএসসি, এইচএসসি এর সার্টিফিকেট।
  • Recommendation Letter (সুপারিশ পত্র), Testimonial ( প্রশংসাপত্র) লাগবে। Recommendation Letter সাধারণত যারা স্নাতকোত্তর পড়তে যেতে ইচ্ছুক তাদের স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য অত্যন্ত দরকারি একটি ডকুমেন্ট।
  • বিদেশে যে প্রতিষ্ঠানে পড়তে যাচ্ছেন সেখানকার অফার লেটার ( Offer Letter) ।
  • ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট ( IELTS, TOEFL)
  • মেডিকেল হেলথ রিপোর্ট এর কপি
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট

টুরিস্ট ভিসা

টুরিস্ট ভিসার জন্য নিম্নের ডকুমেন্টস জমা দিতে হবেঃ

  • একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে (পাসপোর্টের মেয়াদ নূন্যতম ৬ মাস হতে হবে)
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  • মেডিকেল হেলথ রিপোর্ট এর কপি
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট

ভিসা আবেদন ফি কত?

ভিসা ক্যাটাগরি এবং দেশের উপর নির্ভর করে ভিসা আবেদন ফি এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বিভিন্ন দেশের ভিসা আবেদন ফি আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। আবার আপনার ভিসার ধরণের উপর ভিত্তি করেও ভিসা ফি কম-বেশি হতে পারে। যেমনঃ মালয়েশিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন ফি ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে রোমানিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন ফি ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা।

তাই বলা যায়, দেশ ও ভিসা ক্যাটাগরির উপর ভিসা আবেদন ফি নির্ভর করে ।

ভিসা সংক্রান্ত অন্যান্য প্রশ্নোত্তর

১। ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে?

উঃ দেশ এবং ভিসার ধরণ অনুযায়ী ভিসা পেতে কতদিন লাগবে সেই সময় পরিসীমা নির্ধারন করা হয়। যেমনঃ রোমানিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে ৫ থেকে ৬ মাস লাগে অপরদিকে সিঙ্গাপুর ভিসা পেতে সর্বোচ্চ ১ মাস লাগতে পারে।

২। ভিসার মেয়াদ কতদিন থাকে?

উঃ ভিসার মেয়াদ ভিসার ক্যাটাগরি এবং দেশের উপর নির্ভর করে। যেমনঃ আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় কোন দেশে যান আপনার ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ ৩ মাস থাকবে। আবার স্টুডেন্ট ভিসায় কোন দেশে গেলে আপনার কোর্স শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভিসার সময় থাকবে।

বিভিন্ন দেশের ভিসা চেক করতে দেখুন

পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক

আরও পড়ুন

শেয়ার করুন

7 thoughts on “ভিসা কীভাবে করতে হয়? ভিসা করতে কি কি লাগে?”

  1. Great site you’ve got here.. It’s difficult to find good quality
    writing like yours these days. I really appreciate people like you!

    Take care!!

    Reply
  2. It’s actually a nice and helpful piece of information. I’m satisfied that you just shared this useful info with
    us. Please keep us informed like this. Thanks for sharing.

    Reply

Leave a Comment