বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া একটি। প্রতি বছর আমাদের দেশ থেকে বহু মানুষ উচ্চশিক্ষা, পরিভ্রমন বা কাজের উদ্দশ্যে অস্ট্রেলিয়া যায়। তবে দেশ বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রায়ই অস্ট্রেলিয়া ভিসা জালিয়াতির নিউজ শোনা যায়। তাই দালাল চক্রের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচার জন্য কিভাবে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পাওয়া যায় সে বিষয়ে জানতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া ভ্রমনে যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে অনলাইনে ভিসা স্ট্যাটাস চেক করে নিতে হবে। ভিসার বৈধতা নিশ্চিত না করে বিদেশে গেলে আপনাকে আর্থিক ক্ষতিসহ নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই ভিসা অনুমোদন পাওয়ার পর অনলাইনে আপনার ভিসা চেক করে নিবেন।
বর্তমানে মোবাইল এবং ইন্টারনেটের সুবাদে নিজে ঘরে বসে অনলাইনে কয়েক মিনিটের মধ্যে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে অনলাইনে ভিসা চেক করে নিতে পারেন।
তাই আপনাদের কথা চিন্তা করেই এই আর্টিকেলটি লেখা যেন আপনারা সহজেই ঘরে বসে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ভিসা চেক করে এর সত্যতা যাচাই করতে পারেন।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ভিসা চেক
অস্ট্রেলিয়া ভিসা চেক করার জন্য আপনার মোবাইল, ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার থেকে যেকোন একটি ব্রাউজার ওপেন করে এই লিংকে https://online.immi.gov.au/evo/firstParty যেতে হবে। ভিসা চেক করার জন্য আপনার পাসপোর্ট নাম্বার এবং ভিসা ফর্ম-এ থাকা ভিসা গ্র্যান্ট নাম্বার প্রয়োজন। আপনি চাইলে ট্র্যানজ্যাকশন রেফারেন্স নাম্বার দিয়েও অস্ট্রেলিয়া ভিসা চেক করতে পারবেন।
এখন নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই আপনি আপনার ভিসা স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।
ধাপ ১ঃ
প্রথমে আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে যেকোনো একটি ব্রাউজারে যেয়ে এই লিংকে [ https://online.immi.gov.au/evo/firstParty ] প্রবেশ করুন। তারপর নিচের পেইজটির মত একটি পেইজ দেখতে পাবেন।
ধাপ ২ঃ
তারপর choose a document type থেকে passport সিলেক্ট করুন।
ধাপ ৩ঃ
রেফারেন্স টাইপ থেকে ভিসা গ্র্যান্ট নাম্বার সিলেক্ট করুন। আর ভিসা গ্র্যান্ট নাম্বার ভিসা ফর্ম এর নিচের দিকে ভিসা সামারির ভিতরে পেয়ে যাবেন। তারপর ভিসা গ্র্যান্ট নাম্বার এর নিচের বক্সে নাম্বারটি লিখুন।
ধাপ ৪ঃ
তারপর date of birth বক্সে নিজের জন্মতারিখ লিখুন। ডকুমেন্ট নাম্বার বক্সে ভিসা ফর্ম-এ থাকা ডকুমেন্ট নাম্বারটি সতর্কতা অবলম্বন করে টাইপ করুন।
ধাপ ৫ঃ
এরপর country select করতে হবে। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে হবে যে, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ইন্ডিয়া, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, এই দেশগুলোর জন্য অস্ট্রেলিয়ার ভিসা not available অর্থাৎ এই দেশগুলো নির্বাচন করে ভিসা অনুমোদন পাওয়া যায় না। সেজন্য country selection এর একটু নিচের দিকে UNSPCFED NATIONALITY সিলেক্ট করতে হবে।
ধাপ ৬ঃ
সবশেষে View Terms and Conditions box এ টিক চিহ্ন দিয়ে submit অপশনে ক্লিক করলেই আপনি আপনার ভিসা স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন।
এভাবে আপনি ঘরে বসে কয়েক মিনিটের মধ্যে অস্ট্রলিয়া ভিসা চেক করে এর সত্যতা যাচাই করতে পারবেন।
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
অস্ট্রেলিয়াতে কাজের ভিসা পাওয়া মোটেই সহজ কোন ব্যাপার নয়। কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য আপনার যোগ্যতা থাকতে হবে। আপনাকে অনেক দক্ষ ও বিচক্ষন হতে হবে, নির্দিষ্ট কোন কাজের উপর অভিজ্ঞ হতে হবে তবেই আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে পারেন। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসার খরচ প্রায় ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। আর অন্যান্য দেশের তুলনায় অস্ট্রেলিয়া সরকার প্রবাসি শ্রমিক খুব কম নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
অস্ট্রেলিয়া স্টুডেন্ট ভিসা
অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় পরতে যাওয়া যায়। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেক শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্ট ভিসায় পরতে যায়। অস্ট্রেলিয়ায় স্টুডেন্টদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব ( রেস্টুরেন্ট অথবা ডেলিভারি বয় ইত্যাদি) করা যায়। তবে অস্ট্রেলিয়ার স্টুডেন্ট ভিসা ফি একটু বেশি প্রায় ১ হাজার ৬৮ মার্কিন ডলার ( বাংলাদেশি টাকায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ) যা এই বছর এর ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়েছে। বর্তমানে স্টুডেন্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যেতে আনুমানিক ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা লাগে।
অস্ট্রেলিয়া টুরিস্ট ভিসা
অস্ট্রেলিয়ায় টুরিস্ট ভিসা পাওয়া তুলনামূলক সহজ। আপনি নিজেই অনলাইনে টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। টুরিস্ট ভিসায় আপনি অস্ট্রেলিয়াতে সর্বনিম্ন ১ মাস থেকে ৩ মাস পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের অন্যতম সুন্দর একটি রাষ্ট্র। অস্ট্রেলিয়ার অপেরা হাউজ বিশ্ববিখ্যাত। এছাড়া রয়েছে অন্যান্য আরও দর্শনীয় স্থান এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- মেলবোর্ন, সিডনি অপেরা হাউজ, হারবার ব্রিজ, রয়েল ন্যাশনাল পার্ক, কুইন ভিক্টোরিয়া বিল্ডিং ইত্যাদি অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে ভ্রমনের জন্য। টুরিস্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়া যেতে সর্বনিম্ন ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা লাগে।
অস্ট্রেলিয়া যেতে কি কি কাগজপত্র লাগবে?
অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য আপনার যোগ্যতা এবং যে কাজের জন্য আপনি যেতে চাচ্ছেন সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে রাখবেন। এসব ডকুমেন্টস ছাড়া আপনি ভিসার আবেদন করতে পারবেন না। এখন ভিসার আবেদনের জন্য কি কি সাধারনত ডকুমেন্টস প্রয়োজন তা যেনে নেয়া যাক-
- পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- আপনার সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- স্কিল সার্টিফিকেট
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- পূর্বে কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ
- আইএলটিএস এর সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটকপি
- চারিত্রিক সনদপত্র
- ভ্রমণ বীমার কাগজ
- ব্যাংক স্ট্যাট্মেন্টস এর ফটকপি
- করোনা টিকা সার্টিফিকেট
ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী কাগজপত্র গুছিয়ে রাখবেন যাতে ভিসা আবেদন করতে কোন অসুবিধা না হয়। আপনি বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া ভিসা পাওয়ার জন্য ঢাকার গুলশানে অবস্থিত অস্ট্রেলিয়া এমব্যাসিতে চলে যেতে পারেন। সেখানে যেয়ে তাদের শর্তানুসারে নির্দিষ্ট ডকুমেন্টস জমা দিয়ে যে ধরনের ভিসা প্রয়োজন করে নিতে পারেন। এতে প্রতারণার বা আর্থিক ক্ষতির ও কোন সম্ভাবনা থাকে না।
FAQs
১। অস্ট্রেলিয়া ভিসা চেক করতে কেমন সময় লাগে?
উঃ অনলাইনে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনি অস্ট্রেলিয়া ভিসা চেক করতে পারবেন।
২। অস্ট্রেলিয়া ভিসা ফি কত টাকা?
উঃ ভিসা প্রসেসিং ফি ১ লক্ষ ২৩ হাজার টাকার মত। তবে ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী টাকা কম বা বেশি লাগতে পারে।
৩। অস্ট্রেলিয়া যেতে বিমান ভাড়া কত টাকা ?
উঃ অস্ট্রেলিয়া যেতে বিমান খরচ সর্বনিম্ন ১.৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। বিভিন্ন ক্লাসের জন্য বিমানের টিকেট খরচে পার্থক্য রয়েছে। তাই যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী সিট বুকিং করতে পারবে।
৪। অস্ট্রেলিয়া যেতে কত সময় লাগে?
উঃ অস্ট্রেলিয়া যেতে বিমানের বিরতির উপর নির্ভর করে ১ থেকে ২ দিন সময় লাগতে পারে।
Thank you good information give me.
Thank you for the information!